মায়ানমার ও থাইল্যান্ডে গতকাল পরপর কয়েকটি শক্তিশালী ভূমিকম্পে অন্তত ১৫৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে মায়ানমারে মৃতের সংখ্যা ১৪৪। থাইল্যান্ডে আরও ১০ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। আহতের সংখ্যা ৭০০-রও বেশি। ন্যাশানাল সেন্টার ফর সিসোমোলজি জানিয়েছে, প্রথমবার কম্পন অনুভূত হয় ভারতীয় সময় সকাল ১১ টা ৫৫ মিনিট নাগাদ। রিখটার স্কেলে এর তীব্রতা ছিল ৭ দশমিক ৭। মায়াম্মারের ১২ কিলোমিটার উত্তরে সাগাইং এর কাছে ভূ পৃষ্ঠের দশ কিলোমিটার নীচে ছিল তীব্রতার এর উৎস স্থল। এরপর আরও বেশ কয়েকবার কম্পন অনুভূত হয়।
মায়াম্মারের সামরিক সরকারের প্রধান মিন আয়ুং লাইয়াং টেলিভিশনে এক বার্তায় বলেছেন, নেপিতাও-তে ৯৬ জন, সাগাইং এ ১৮ এবং মান্দালায় ৩০ জনের মৃত্যুর খবর পাোয়া গেছে। হতাহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে রাজধানী নেপিতাও। সেখানে বহু বাড়িঘর স্মৃতিসৌধ ভেঙে পড়েছে। উপড়ে পড়েছে শয়ে শয়ে গাছ, বিদ্যুতের খুঁটি, মোবাইল টাওয়ার। ফাটল ধরেছে রাস্তা ও সেতুতে।
মান্দালায় বহু ঐতিহাসিক স্থান এবং সাগাইং এ ইরাবতী নদীর ওপর ৯০ বছরের পুরনো আভা সেতু ভেঙ্গে পড়েছে। ভূমিকম্পে সড়ক, পরিকাঠামা ও ভবনের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। বিস্তীর্ণ এলাকা যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন। ক্ষয়ক্ষতির বিস্তারিত খবর এখনো পাওয়া যায়নি।
রেড ক্রস সহ বহু সংগঠন, ত্রান ও উদ্ধারের কাজ চালিয়ে যাচ্ছে।
এদিকে, মায়ানমার কর্তৃপক্ষ নেপিতাও ও মান্দালয় সহ ছটি অঞ্চলে জরুরী অবস্থা ঘোষণা করেছে।
প্রায় ৯০০ কিলোমিটার দূরে থাইল্যণ্ডের রাজধানী ব্যাংকংক এ তীব্র কম্পন টের পাওয়া যায়। নদী, পুকুর এবং জলাশয়ের জল উপচে ওঠে। ব্যাঙ্ককে অন্তত ১০ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। ৯০ জন এখনো নিখোঁজ। ভেঙ্গে পড়েছে বেশ কিছু ঘর বাড়ি।
প্রধানমন্ত্রী পেতং তারন শিনাওাত্রা উদ্ভূত পরিস্থিতিতে জরুরি বৈঠকে বসেন। তারপরই ব্যাঙ্ককেও জরুরী অবস্থা ঘোষণা করা হয়। সেখানে মেট্রো ও রেল পরিষেবা বন্ধ রাখা হয়েছে।
এদিকে, ব্যাঙ্ককের ভারতীয় দূতাবাস থাই কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে পরিস্থিতির ওপর নজর রাখছে। তবে এখনো পর্যন্ত ভারতীয় নাগরিকদের কোনো ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি। ব্যাঙ্ককে ভারতীয় দূতাবাস এবং চিয়াংমাইয়ে ভারতীয় বাণিজ্য দূতাবাসের সব কর্মী নিরাপদে আছেন।
মায়ানমার, থাইল্যান্ড ছাড়াও চীন, ভিয়েতনাম, বাংলাদেশ ও ভারতের পুর্ব ও উত্তর পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলিতেও এই ভূমিকম্পের তীব্রতা টের পাওয়া গেছে। কোলকাতা সহ দক্ষিণবঙ্গ বিভিন্ন জেলা থেকেও মৃদু কম্পন ও পুকুর জলাশয়ের জল কেঁপে ওঠার খবর মিলেছে।