প্রবল বৃষ্টি ও ভূমিধ্বসে বিধ্বস্ত উত্তরবঙ্গের পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী সুকান্ত মজুমদারের আজ সেখানে গেছেন। সকালে হাসপাতালে গিয়ে উত্তর মালদার সাংসদ খগেন মুর্মু ও শিলিগুড়ির বিধায়ক শঙ্কর ঘোষ-এর শারীরিক অবস্থার খোঁজ খবর নেন তিনি। পরে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি বলেন, রাজ্যে আইনের শাসন নেই। সাংসদ, বিধায়ক ও দলীয় প্রতিনিধিদের ওপর আক্রমণের ঘটনায় আট জনের নামে লিখিত অভিযোগ দায়ের হওয়ার পরেও এখনো পর্যন্ত পুলিশ তাদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেয়নি বলে তাঁর অভিযোগ।
এরপর শ্রী মজুমদার জলপাইগুড়ির ময়নাগুড়ি সহ বন্যা কবলিত বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখেন। দুর্গতদের হাতে তুলে দেন ত্রাণ সামগ্রী। বিকেলে জলপাইগুড়িতে দলীয় কার্যালয়ে বিজেপির কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করবেন তিনি।
আগেই জানানো হয়েছে, লোকসভার অধ্যক্ষ ওম বিড়লা, নাগরাকাটায় ত্রাণ বিলি করতে গিয়ে বিজেপি সাংসদের উপর আক্রমণের ঘটনায় রাজ্য সরকারের কাছে রিপোর্ট তলব করেছেন। মুখ্যসচিব মনোজ পন্থকে এব্যাপারে লোকসভার সচিবালয় থেকে চিঠি পাঠানো হয়েছে। সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী কিরেণ রিজিজু গতকাল উত্তরবঙ্গের পরিস্থিতি পরিদর্শনে এসে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে জানান, রাজ্য এই রিপোর্ট না পাঠালে সরকারের বিরুদ্ধে ‘স্বাধিকার ভঙ্গের’ অভিযোগ আনা হবে। রাজ্যপাল ডক্টর CV আনন্দ বোস গতকাল নাগরাকাটায় আক্রান্ত সাংসদ ও বিধায়ককে দেখতে যান। প্রাকৃতিক দুর্যোগে বিপর্যস্ত এলাকায় শান্তি রক্ষার জন্য প্রশাসনের প্রতি আবেদন জানান তিনি।
বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী’ও গতকাল চিকিৎসাধীন সাংসদ ও বিধায়ককে হাসপাতালে দেখতে যান। মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জিও গতকাল দুধিয়া থেকে উত্তরকন্যা ফেরার পথে শ্রী মুর্মুকে দেখতে যান। এর আগে মুখ্যমন্ত্রী গতকাল মিরিকে ক্ষতিগ্রস্থ এলাকা ঘুরে দেখেন। কথা বলেন স্থানীয় মানুষ জনের সঙ্গে। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি শুভঙ্কর সরকারের নেতৃতে এক প্রতিনিধি দলও গতকাল বিপর্যস্ত এলাকা পরিদর্শন করেন। উত্তরবঙ্গের এই পরিস্থিতিকে তিনি ‘জাতীয় বিপর্যয়’ হিসেবে ঘোষণার দাবী জানান।
আজ বেলায় শিলিগুড়ির বিধায়ক শঙ্কর ঘোষকে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে।
উল্লেখ্য, উত্তরবঙ্গের ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় ত্রাণ ও উদ্ধারকাজ অব্যাহত। এই বিপর্যয়ে এখনো পর্যন্ত রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে ২৭ জনের মৃত্যুর খবর জানানো হয়েছে।