প্রবল বৃষ্টি ও ভূমিধ্বসে বিপর্যস্ত উত্তরবঙ্গে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় ত্রাণ ও উদ্ধারকাজ জোর কদমে চলছে। পূর্ত, জনস্বাস্থ্য কারিগরী, অসামরিক প্রতিরক্ষা, বিপর্যয় মোকাবিলা, বিদ্যুৎ ও দমকল দপ্তরের পাশাপাশি বেসরকারী নানা সংগঠন ত্রাণ বিলির কাজে হাত লাগিয়েছে। এই বিপর্যয়ে এখনো পর্যন্ত রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে ২৭ জনের মৃত্যুর খবর জানানো হয়েছে।
লোকসভার অধ্যক্ষ ওম বিড়লা, নাগরাকাটায় ত্রাণ বিলি করতে গিয়ে বিজেপি সাংসদের উপর আক্রমণের ঘটনায় রাজ্য সরকারের কাছে রিপোর্ট তলব করেছেন। মুখ্যসচিব মনোজ পন্থকে এব্যাপারে লোকসভার সচিবালয় থেকে চিঠি পাঠানো হয়েছে। সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী কিরেণ রিজিজু গতকাল উত্তরবঙ্গের পরিস্থিতি পরিদর্শনে এসে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে জানান, রাজ্য এই রিপোর্ট না পাঠালে সরকারের বিরুদ্ধে ‘স্বাধিকার ভঙ্গের’ অভিযোগ আনা হবে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কাছে তিনি উত্তরবঙ্গের বন্যা পরিস্থিতির রিপোর্ট দেবেন বলেও জানান। রাজ্যপাল ডক্টর CV আনন্দ বোস গতকাল নাগরাকাটায় ত্রাণ বিলি করতে গিয়ে আক্রান্ত মালদা উত্তরের সাংসদ খগেন মুর্মু এবং শিলিগুড়ির বিধায়ক শঙ্কর ঘোষকে দেখতে যান। গণতন্ত্রে পক্ষে এ’ধরনের ঘটনা কাম্য নয় বলেও মন্তব্য করেন তিনি। প্রাকৃতিক দুর্যোগে বিপর্যস্ত এলাকায় শান্তি বজায় রাখতে প্রশাসনের প্রতি আবেদন জানান তিনি।
উত্তরবঙ্গের পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী সুকান্ত মজুমদারের আজ সেখানে গেছেন। আজ সকালে হাসপাতালে গিয়ে খগেন মুর্মু ও শঙ্কর ঘোষ-এর শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে খোঁজ খবর নেন তিনি। পড়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি বলেন, দুর্যোগ কবলিত এলাকার মানুষের সাহায্যে গিয়ে যেভাবে সাংসদ, বিধায়ক ও দলীয় প্রতিনিধিদের ওপর আক্রমণ হয়েছে, তা নিন্দনীয়। এখনো পর্যন্ত এই ঘটনায় কাউকে গ্রেপ্তার করা গেলোনা কেন, সেই প্রশ্ন’ও তোলেন তিনি।
বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী’ও গতকাল চিকিৎসাধীন সাংসদ ও বিধায়ককে হাসপাতালে দেখতে যান। মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জিও গতকাল দুধিয়া থেকে উত্তরকন্যা ফেরার পথে শ্রী মুর্মুকে দেখতে যান। এর আগে মুখ্যমন্ত্রী গতকাল মিরিকে ক্ষতিগ্রস্থ এলাকা ঘুরে দেখেন। কথা বলেন স্থানীয় মানুষ জনের সঙ্গে। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি শুভঙ্কর সরকারের নেতৃতে এক প্রতিনিধি দলও গতকাল বিপর্যস্ত এলাকা পরিদর্শন করেন। উত্তরবঙ্গের এই পরিস্থিতিকে তিনি ‘জাতীয় বিপর্যয়’ হিসেবে ঘোষণার দাবী জানান।