প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বলেছেন যে জাতিকে “ভোকাল ফর লোকাল” মন্ত্র, “আত্মনির্ভর ভারত” এর পথ এবং “উন্নত ভারতের লক্ষ্য” নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে। আজ আকাশবাণীতে “মন কি বাত” অনুষ্ঠানে নিজের চিন্তাভাবনা ভাগ করে নিয়ে শ্রী মোদী বলেন, উৎসবের মরশুমে দেশবাসীর স্বদেশের কথা কখনও ভুলে যাওয়া উচিত নয়। তিনি বলেন, উপহার হওয়া উচিত ভারতে তৈরি জিনিসপত্র, পোশাক হওয়া উচিত ভারতে বোনা জিনিসপত্র, সাজসজ্জা হওয়া উচিত ভারতে তৈরি জিনিসপত্র, জীবনের প্রতিটি প্রয়োজনের সবকিছুই স্বদেশী হওয়া উচিত।
প্রধানমন্ত্রী আজ ১২৫-তম মন কি বাত অনুষ্ঠানে বর্ষার মরশুমে প্রাকৃতিক বিপর্যয় থেকে উদ্ধারকার্যে সামাজিক কর্মকর্তা, ডাক্তার, স্থানীয় মানুষদের উদ্যোগের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন। তিনি বলেন, NDRF, SDRF-এর পাশাপাশি সাধারণ মানুষ’ও কঠিন সময়ে মানবিকতাকে সবার ওপরে স্থান দিয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, এক ভারত-শ্রেষ্ঠ ভারতের চেতনা জাতির উন্নয়নের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং খেলাধুলা এতে একটি বড় ভূমিকা পালন করে। শ্রী মোদী বলেন, যে খেলে, সে প্রস্ফুটিত হয়। তিনি শ্রীনগরের ডাল লেকে অনুষ্ঠিত প্রথম খেলো ইন্ডিয়া জল ক্রীড়া উৎসবের কথা উল্লেখ করেন যেখানে সারা দেশ থেকে ৮০০ জন ক্রীড়াবিদ অংশগ্রহণ করেছিলেন। অনুষ্ঠান চলাকালীন, প্রধানমন্ত্রী ওড়িশার রশ্মিতা সাহু এবং শ্রীনগরের মহসিন আলীর সাথে আলাপচারিতা করেন, যারা এই ইভেন্টে অংশগ্রহণ করেছিলেন এবং সোনা জিতেছিলেন।
সৌরশক্তি কৃষকদের জীবনকেও বদলে দিচ্ছে উল্লেখ করে শ্রী মোদী বিহারের মুজাফফরপুরের দেবকির কথা উল্লেখ করেন, যিনি সৌর পাম্প দিয়ে তার গ্রামের ভাগ্য বদলে দিয়েছিলেন। তিনি বলেন, আগে মাত্র কয়েক একর জমিতে সেচের ব্যবস্থা ছিল, কিন্তু এখন ৪০ একরেরও বেশি জমিতে জল পৌঁছে যাচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম প্রতিভা সেতুর উপযোগিতার কথা উল্লেখ করেন যেখানে ইউপিএসসির বিভিন্ন পরীক্ষায় সকল ধাপে উত্তীর্ণ হওয়া সত্ত্বেও চূড়ান্ত মেধা তালিকায় নাম না থাকা প্রার্থীদের তথ্য সংরক্ষণ করা হয়।
নরেন্দ্র মোদী এদিন পডকাস্টের সম্ভাবনার কথা বলতে গিয়ে বিখ্যাত পডকাস্টার লেক্স ফ্রিডম্যানের সঙ্গে তাঁর কথাবার্তা স্মরণ করেছেন। এই পডকাস্ট’টি সারা বিশ্বের মানুষ শুনেছিলেন। একজন বিখ্যাত জার্মান ক্রীড়াবিদ এটি শুনে ভারতের ক্রীড়া উদ্যোগের সঙ্গে নিজেকে যুক্ত করতে আগ্রহী হয়েছেন।
সুরাটের জিতেন্দ্র সিং রাঠোর একজন সিকিউরিটি গার্ড। তাঁর একটি বিশেষ উদ্যোগের কথা প্রধানমন্ত্রী এদিন তুলে ধরেছেন। শ্রী রাঠোর প্রথম বিশ্বযুদ্ধ থেকে শুরু করে আজ পর্যন্ত যত বীর জওয়ান শহীদ হয়েছেন, তাঁদের ছবি ও তথ্য সংগ্রহ করে চলেছেন। সশস্ত্র সেনাদের প্রতি গভীর ভালবাসা থেকেই তিনি এই কাজ করছেন।
আগামী ১৫ ই সেপ্টেম্বর বিখ্যাত ইঞ্জিনিয়ার বিশ্বেশ্বরাইয়ার জন্মদিনটি এদেশে ইঞ্জিনিয়ার্স ডে হিসাবে পালিত হবে। মন কি বাতে প্রধানমন্ত্রী দেশের সব ইঞ্জিনিয়ারদের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। ১৭ ই সেপ্টেম্বর বিশ্বকর্মা পুজো। শ্রী মোদী বলেছেন, এই দিনটি সেইসব বিশ্বকর্মা বন্ধুদের প্রতি সমর্পণ করা হয়, যারা শিল্পের ঐতিহ্য এবং জ্ঞান বিজ্ঞানকে অনবরত এক প্রজন্ম থেকে অন্য প্রজন্মে পৌঁছে দিচ্ছেন। দেশের সূত্রধর, কামার, স্বর্ণকার, কুম্ভকার, মৃৎশিল্পী এরা প্রত্যেকেই সমৃদ্ধির বুনিয়াদ তৈরি করছেন। এদের জন্যই সরকার বিশ্বকর্মা যোজনা চালাচ্ছে। সর্দার বল্লভভাই প্যাটেলের অসামান্য অবদানের কথা স্মরণ করে প্রধানমন্ত্রী মনে করিয়ে দিয়েছেন, এই সেপ্টেম্বর মাসেই হায়দ্রাবাদকে নিজামের শাসন থেকে মুক্ত করা হয়েছিল। সেই দিনটিকে হায়দ্রাবাদ লিবারেশন ডে হিসাবে পালন করা হয়ে থাকে।
মন কি বাতে প্রধানমন্ত্রী এদিন বলেছেন, বিশ্বের বড় শহরের পাশাপাশি ছোট ছোট শহরগুলিতেও ভারতীয় সংস্কৃতি ছড়িয়ে পড়ছে। ইতালির ক্যাম্পোরোটন্ডো-য় বাল্মিকী মূর্তির প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। রাশিয়ার ভ্লাডিভোস্টকে রামায়ণের বিভিন্ন থিমের ওপর প্রদর্শনী অজস্র মানুষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিল বলেও প্রধানমন্ত্রী জানান।