পশ্চিম বর্ধমানের দুর্গাপুরে এক মেডিকেল ছাত্রীকে গণ ধর্ষণের অভিযোগে তীব্র চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। ওড়িশার জলেশ্বরের বাসিন্দা, বেসরকারী মেডিকেল কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ওই ছাত্রী গতরাতে সহপাঠীর সঙ্গে খাবার কেনার জন্য কলেজের বাইরে গিয়েছিলেন। সে সময় কয়েকজন দুষ্কৃতি তাকে নির্জন জায়গায় নিয়ে গিয়ে গণধর্ষণ করে বলে অভিযোগ। পুলিশ নির্যাতিতাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেছে। ইতিমধ্যেই রেকর্ড করা হয়েছে তাঁর বয়ান। ওই পড়ুয়ার সঙ্গীকে আটক করে পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ করছে। নির্যাতিতার বাবা এই ঘটনায় কলেজ কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন। তার অভিযোগ কলেজের নিরাপত্তা বলে কিছু নেই। এব্যাপারে যথেষ্ট সহযোগিতাও মিলছে না ।
ঘটনার পরপরই ক্ষোভে ফেটে পড়ে কলেজের পড়ুয়ারা। তারা নিরাপত্তার দাবিতে বিক্ষোভ অবস্হানে বসেন। ঘেরাও করে রাখা হয় কলেজের অধ্যক্ষকে।
পড়ুয়াদের পাশাপাশি বাম কর্মী সমর্থকরা কলেজে বিক্ষোভ দেখান। সিপিআইএম-এর কর্মীরা কলেজ চত্ত্বরে ঢাকতে গেলে নিরাপত্তরক্ষীদের সঙ্গে তাদের ধস্তাধস্তি বাধে। তৈরি হয় উত্তেজনা। সেখানে উপস্হিত হয়ে সিপিআইএম নেত্রী মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায় বলেন, রাজ্যে পড়ুয়াদের নিরাপত্তা বলে কিছু নেই।
বিধায়ক লক্ষ্মণ ঘোড়ই-এর নেতৃত্বে বিজেপি এবং এবিভিপি কর্মী সমর্থকরা কলেজ চত্ত্বরে বিক্ষোভে সামিল হন।
জাতীয় মহিলা কমিশনের প্রতিনিধি ডাক্তার অর্চনা মজুমদার দুর্গাপুরে পৌঁছেছেন। অপরাধীদের শাস্তি হয় না বলে রাজ্যে নারীদের ওপর অপরাধ বাড়ছে বলে তিনি মন্তব্য করেন।
কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার এই ঘটনায় ফের একবার রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্হিতি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।
রাজ্য স্বাস্হ্য শিক্ষা দফতর কলেজ কর্তৃপক্ষের কাছে এই ঘটনার রিপোর্ট তলব করেছে বলে খবর।
এদিকে, আর জি করের পিজিটি তরুণী চিকিৎসকের ধর্ষণ ও মৃত্যুর পর ফের একবার ডাক্তারি পড়ুয়ার ওপর অত্যাচারের ঘটনায় সরব হয়েছেন চিকিৎসক মহল থেকে সাধারণ মানুষ।
ডাক্তারদের সংগঠন সার্ভিস ডক্টর্স ফোরামের সাধারণ সম্পাদক সজল বিশ্বাস বলেন, রাজ্যে একের এক ভয়াবহ ঘটনা ঘটছে। অপরাধীদের অবিলম্বে গ্রেফতারের দাবি জানিয়েছেন তারা।
অ্যাসোসিয়েশন অফ হেল্থ সার্ভিস ডক্টর্স এই ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি জানিয়েছে।
জুনিয়ার ডাক্তারদের সংগঠন WBJDA – এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছে। অভিযুক্তদের সকলকে অবিলম্বে গ্রেফতার, দ্রুত বিচার, নির্যাতিতার চিকিৎসার দাবিও জানিয়েছে তারা।
ওয়েস্টবেঙ্গল জুনিয়ার ডক্টর্স ফ্রন্টের সদস্য ডাক্তার অনিকেত মাহাতো বলেন, রাজ্যে দোষীদের বিরুদ্ধে সরকার এবং প্রশাসন কোন ব্যবস্হা নেয় না। এরফলে যাখুশি করার স্বাধীনতা পাচ্ছে অপরাধীরা।
ঘটনার প্রতিবাদে বিজেপি কর্মী সমর্থকরা রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন। আসানসোলে রাস্তা অবরোধ করে টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভে সামিল হয়েছেন বিজেপি বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পাল।
 
									