কলকাতার বড়বাজার এলাকায় মেছুয়া ফল পট্টিতে এক বিধ্বংসী অগ্নিকান্ডে কমপক্ষে ১৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। এদের মধ্যে একজন মহিলা ও দুটি শিশু । আহত ১৩ জনকে বিভিন্ন হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পর ১২ জনকে ছেড়ে দেওয়া হয়। আশঙ্কাজনক অবস্হায় একজন চিকিৎসাধীন। মৃতদের মধ্যে ৮ জনকে এখনও পর্যন্ত সনাক্ত করা গেছে।
গত সন্ধ্যায় লাগা আগুন বহুতলের অন্যান্য অংশে ছড়িয়ে পড়ায় তা দ্রুত ভয়ঙ্কর আকার নেয়। আমাদের প্রতিনিধি শিপ্রা সেন সাহা জানিয়েছেন, দমকলের ১১-টি ইঞ্জিন পরিস্হিতি সামাল দিতে ঘটনাস্হলে পৌঁছয়। যায় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীও। ঘটনার তদন্তে সিট গঠন করা হয়েছে বলে পুলিশ কমিশনার জানিয়েছেন। ডিসি সেন্ট্রাল বলেন, ৪২-টি ঘরে ৮৮ জন আবাসিক ছিলেন। হোটেলের মোট কর্মী সংখ্যা ৬০।
এদিকে, আগুনের আতঙ্কে মনোজ পাসোয়ান নামে এক হোটেল কর্মী ছাদ থেকে ঝাঁপ দিলে তাঁর মৃত্যু হয়। হাইড্রোলিক ল্যাডার নিয়ে এসে আটকে থাকা লোকজনদের নীচে নামান উদ্ধারকারী কর্মীরা।
অন্যদিকে ওই বহুতলে আটকে পড়া আরও ১৩ জনের দেহ উদ্ধার হয়েছে। তাদের মধ্যে হোটেল কর্মী ও আবাসিক রয়েছেন। প্রচন্ড ধোঁয়ায় দমবন্ধ হয়ে তাঁরা প্রাণ হারিয়েছেন বলে মনে করা হচ্ছে। ওই আবাসনে অনেকেই থাকায় মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা। মেডিকেল কলেজ, এন আর এস এবং আর জি কর হাসপাতালে আজ মৃতদের ময়না তদন্ত হবে। ভোররাতে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে।
এদিকে, কলকাতা পুরসভার মেয়র ফিরহাদ হাকিম, মন্ত্রী শশী পাঁজা, পুলিশ কমিশনার ডিসি সেন্ট্রাল এবং জয়েন্ট সিপি ক্রাইম সারারাত ঘটনাস্হলে ছিলেন। আজ ফরেন্সিক টিমের সেখানে যাওয়ার কথা। হোটেল মালিক পলাতক। তার খোঁজে তল্লাশি শুরু হয়েছে।
মেয়র গোটা ঘটনা খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্হা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন। পুলিশ কমিশনার জানিয়েছেন দোতলার রান্না ঘর থেকে আগুন লাগে বলে প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে।
কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি ক্ষতিগ্রস্তদের কাছে দ্রুত সাহায্য পৌঁছে দেওয়ার জন্য রাজ্য সরকারের প্রতি আবেদন জানিয়েছেন। এধরনের দুঃখজনক ঘটনা এড়াতে অগ্নি নির্বাপন ব্যবস্থাপনায় কঠোর নজরদারির দাবিও করেন তিনি।
প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি শুভঙ্কর সরকার রাজ্যে অগ্নিকান্ড এড়াতে পরিকাঠামোর অভাব রয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি। নিহতদের পরিবারকে উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ দেওয়ারও দাবি জানিয়েছেন।