অতি প্রবল সামুদ্রিক ঘূর্ণিঝড় ‘মন্থা’ মছলিপত্তনম ও কলিঙ্গপত্তনমের মধ্যবর্তী এলাকায় গতরাতে অন্ধ্রপ্রদেশ ও ইয়ানন উপকূল অতিক্রম করে স্থলভাগে প্রবেশ করেছে। কাকিনারার কাছে আছড়ে পরার সময় এর গতিবেগ ছিল ঘন্টায় ৯০ কিলোমিটার।
এরপর এটি ধীরে ধীরে শক্তি হারিয়ে অতি গভীর নিম্নচাপে পরিণত হয়ে উত্তর-উত্তর পশ্চিমের তেলেঙ্গানা ও দক্ষণ ছত্তিশগড়ের দিকে অগ্রসর হচ্ছে। ক্রমশঃ তা’ আরো শক্তি ক্ষয় করে ৬’ঘন্টার মধ্যে গভীর নিম্নচাপে পরিণত হবে।
এদিকে, মন্থার প্রভাবে অন্ধ্রপ্রদেশে প্রবল ঝড় বৃষ্টিতে ৪৩ হাজার হেক্টর জমির ফসল নষ্ট হয়ে গেছে। শ্রীকাকুলাম, ভিজিয়ানা গ্রাম, বিশাখাপত্তনম, আনাকাপাল্লে, নেলোর, কোনাসীমা ও কাকিনারায় ব্যপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। কোনাসীমায় ঝড়ে গাছ পড়ে একজনের মৃত্যু হয়েছে। ৭৬ হাজার মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। সরকার তিন হাজার ত্রাণ কেন্দ্র ও ২০০ টি মেডিক্যাল ক্যাম্প খুলেছে। জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী NDRF-এর ১১ এবং রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী- SDRF-এর ১২ টি দল, ত্রাণ ও উদ্ধারের কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। পরিস্থিতির ওপর ২৪ ঘন্টা নজরদারির জন্য ৫৪ টি ডিভিশনে খোলা হয়েছে কন্ট্রোল রুম। মুখ্যমন্ত্রী চন্দ্রবাবু নাইডু ত্রাণ ও উদ্ধারের কাজ তদারকি করছেন। প্রবল ঘূর্ণিঝড়ের দাপটে সবচেয়ে বেশী বৃষ্টি হয় নেলোর জেলায়। আবহাওয়া দপ্তর আজ’ও অন্ধ্র ও ইয়াননের বেশীরভাগ এলাকায় মাঝারি বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে। কয়েকটি জায়গায় ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টিও হতে পারে।
মন্থার প্রভাবে ওড়িশার দক্ষিণাঞ্চলীয় জেলা বিশেষ করে গজপতি ও গঞ্জামে প্রবল ঝড় বৃষ্টি হয়েছে। বৃষ্টিতে ধস নামায় গজপতি জেলায় উদয়গিরি ও পারলাখেমুন্ডি এবং রায়গারা জেলায় কাশীপুর এলাকা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। অনেক জায়গায় গাছ পড়ে যাওয়ায় যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন। হতাহতের অবশ্য কোনো খবর নেই।
ভুবনেশ্বরের আবহাওয়া দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার পর্যন্ত এই বৃষ্টি চলবে। মুখ্যমন্ত্রী মোহনচরণ মাঝি বলেছেন, মন্থার বড় ধরণের প্রভাব রাজ্যের ওপর পড়েনি। ঘূর্ণিঝড় আছড়ে পরার পর রাজ্য বিপর্যয় পরিচালন কর্তৃপক্ষ-SDM-এর কন্ট্রোল রুমে গিয়ে পরিস্থিতি সরেজমিনে পর্যালোচনা করেন তিনি। সতর্কতামূলক বিভিন্ন ব্যবস্থা অবশ্য বলবত রয়েছে বলে মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন।