সাউথ ক্যালকাটা ল কলেজের ক্যাম্পাসের মধ্যেই এক পড়ুয়াকে গণধর্ষণের ঘটনায় উত্তাল রাজ্য রাজনীতি। এই ঘটনায় শাসকদলের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছে বিজেপি সহ রাজ্যের অন্যান্য বিরোধী দলগুলি।
ইতোমধ্যেই গণধর্ষণের ঘটনায় স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে রিপোর্ট তলব করেছে জাতীয় মহিলা কমিশন। এক্ষেত্রে কি পদক্ষেপ করা হচ্ছে, তা তিনদিনের মধ্যে বিস্তারিতভাবে রিপোর্ট আকারে জমা দিতে হবে। কমিশনের চেয়ারপার্সন বিজয়া রাহাতকার এব্যাপারে কলকাতা পুলিশ কমিশনার মনোজ ভার্মাকে চিঠি লিখে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
আগেই জানানো হয়েছে, গত বুধবার কলেজের ক্যাম্পাসের ভেতরেই এই ঘটনা ঘটে। ঐদিনই নির্যাযিতা তরুণী কসবা থানায় তিনজনের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করে। এদের মধ্যে মূল অভিযুক্ত ঐ কলেজেরই প্রাক্তন ছাত্র, মনোজিত মিশ্র শসাকদলের ঘনিষ্ঠ। বাকি দুজন প্রমিত মুখোপাধ্যায় এবং জায়েব আহমেদ ঐ কলেজেরই বর্তমান পড়ুয়া। নির্যাতিতার দাবি, ঐদিন সন্ধ্যা সাড়ে সাতটা থেকে রাত ১০ টা পর্যন্ত কলেজেরই একটি ঘরে তার ওপর অত্যাচার চলে। ন্যাশানাল মেডিকেল কলেজে তরুণীর শারীরিক পরীক্ষা করা হয়েছে। পুলিশ তার জবানবন্দীও নিয়েছে। সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখে শুরু হয়েছে তদন্ত। ফরেন্সিক টিম ঘটনাস্থলে গিয়ে নমুনা সংগ্রহ করেছে।
কলেজ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, মনোজিতকে গভর্নিং বডির সুপারিশে কলেজেরই অস্থায়ী কর্মী হিসাবে নিয়োগ করা হয়েছিল। ধৃতদের আজ আলিপুর আদালত চারদিনের পুলিশি হেফাজেত পাঠিয়েছে।
এদিকে অভয়া কান্ডের পর এই ঘটনায় ফের একবার ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। বিজেপি রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার আজ নদীয়ার ভাতজাংলায় সাংবাদিকদের কাছে বলেন, এরাজ্যে মেয়েরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে।
বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী গণধর্ষণের ঘটনায় মুখ্যমন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি করেছেন।
এসএফআই-এর রাজ্য সম্পাদক ও সভাপতি দেবাঞ্জন দের অভিযোগ, ধৃতরা প্রত্যেকেই শাসকদলের সঙ্গে যুক্ত। কলেজের ভেতর নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন তিনি।
এসএফআই আজ কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে পথ অবরোধ ও বিক্ষোভ কর্মসূচী পালন করে। বর্তমান সরকারের আমলে কলেজের ইউনিয়ন রুমগুলি সমাজবিরোধীদের আখড়া বানিয়ে ফেলা হয়েছে বলে অভিযোগ। এসএফআই, ডিওয়াইএফআই এবং এআইডিডব্লিও-এর পক্ষ থেকে আজ কসবা থানা ঘেরাও কর্মসূচী নেওয়া হয়েছে।
কংগ্রেস আজ ঘটনার প্রতিবাদে কসবা থানার সামনে বিক্ষোভ কর্মসূচী পালন করে।
ল কলেজের এই ঘটনায় আর জি করের পুনরাবৃত্তি বলে পশ্চিমবঙ্গ জুনিয়ার ডক্টর্স ফ্রন্ট WBJDF মত প্রকাশ করেছে। সংগঠনের পক্ষ থেকে আজ কসবা থানায় স্মারকলিপি জমা দেওয়ার প্রস্তাবও নেওয়া হয়েছে।
অন্যদিকে, তৃণমূল কংগ্রেস ল কলেজে ধর্ষণের ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়েছে। দলের তরফে আজ এক সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টে জানানো হয়েছে, মুখ্যমন্ত্রীর নেতৃত্বে রাজ্য প্রশাসন আক্রান্তের পাশে রয়েছে। ধর্ষণ রুখতে অপরাজিতা বিল বাস্তবায়নের জন্যও সওয়াল করা হয়েছে ঐ পোস্টে।