দক্ষিণ কলকাতার কসবার ল’কলেজে তরুণী ছাত্রীর গণধর্ষণের ঘটনায়, পুলিশ যথাযথ তদন্ত করছেনা বলে, বিজেপি অভিযোগ করেছে। ওই ঘটনা খতিয়ে দেখতে আসা বিজেপির ‘ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং কমিটি’, আজ নতুন দিল্লীতে দলের সর্বভারতীয় সভাপতি জগত প্রকাশ নাড্ডার কাছে তাদের রিপোর্ট পেশ করে।
পরে ঘটনা পরিদর্শনে আসা কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দলের সদস্য সত্যপাল সিং সাংবাদিকদের বলেন, পুলিশ সমস্ত তথ্য বিকৃত করেছে। ঘটনার মূল অভিযুক্তের নামই FIR থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে বলেও তাঁর দাবী। মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জী, রাজ্যে অপরাধীদের প্রশয় দিচ্ছেন এবং পুলিশ প্রশাসন তাদের দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ বলেও শ্রী সিং অভিযোগ করেন। মহিলা মুখ্যমন্ত্রীর শাসনকালে আইনের ছাত্রীর ওপর এই ধরণের নির্যাতন অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা হিসেবে অভিহিত করেন তিনি।
উল্লেখ্য, বিজেপির চার সদস্যের ওই কমিটি, তাদের রিপোর্টে নিরপেক্ষ বিচার বিভাগীয় তদন্তের সুপারিশ করেছে। সত্যপাল সিং ছাড়াও কমিটিতে ছিলেন, মীনাক্ষী লেখি, বিপ্লব কুমার দেব, মনন কুমার মিশ্র।
রিপোর্টে আরও বলা হয়েছে, এই ঘটনায় তথ্য গোপন করতে কিংবা কোনো প্রভাবশালীকে বাঁচাতে অভিযুক্তদের নাম না লিখে শুধুমাত্র তাদের নামের অধ্যক্ষ লেখা হয়েছে। এই নিয়ে কলকাতার পুলিশ কমিশনারকে প্রশ্ন করা হলে তিনি কোন সঠিক উত্তর দিতে পারেননি। প্রকৃত সত্য প্রকাশ্যে যাতে না আসে তার জন্য তড়িঘড়ি কলেজের নিরাপত্তা রক্ষীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। কলেজের গভর্নিং বডি এই ঘটনার সঙ্গে সরাসরি জড়িত এবং বিধায়ক অশোক দেব মূল অভিযুক্ত সম্পর্কে যাবতীয় বিষয় জানা সত্ত্বেও তাকে অস্থায়ী পদে নিয়োগ করেছেন। নির্যাতিতা ও তার পরিবারের সঙ্গে দেখা না করতে দেওয়ার জন্য পুলিশ সব ধরনের প্রচেষ্টা চালিয়েছে।
জগত প্রকাশ নাড্ডাও এক্স হ্যান্ডেলে জানিয়েছেন,এই রিপোর্টে পশ্চিমবঙ্গের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির চরম অবনতি এবং মহিলাদের নিরাপত্তার প্রতি রাজ্য সরকারের উদ্বেগজনক অসংবেদনশীলতা প্রকাশ্যে এসেছে। সন্দেশখালি থেকে আরজিকর হাসপাতাল সর্বত্রই প্রশাসনের নীরবতা ও নিষ্ক্রিয়তা এবং অভিযুক্তদের রক্ষা কবচ দেওয়ার ধরণ একই।
অন্যদিকে তৃণমূল কংগ্রেস, কসবা কাণ্ডে বিজেপির ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং টিমের রিপোর্ট নিয়ে কটাক্ষ করেছে। । দলের সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ আজ এক সাংবাদিক সম্মেলনে প্রশ্ন তোলেন পুলিশ যেখানে অভিযোগ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই অভিযুক্তদের গ্রেফতার করেছে, সেখানে ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং টিমের ভূমিকা কী। কার্তিক মহারাজের বিরুদ্ধে নির্যাতনের অভিযোগ তোলা মহিলার কাছে ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং টিম যাচ্ছে না কেন, সেই প্রশ্নও তোলেন কুণাল।
এদিকে কসবা ল’কলেজে গণধর্ষণ কান্ডে, চার অভিযুক্তকে আজ আবার আলিপুর আদালতে তোলা হয়। তাদের ২২ শে জুলাই পর্যন্ত জেল হেফাজতে পাঠানো হয়েছে। ধৃতরা মনজিত মিশ্র, প্রমিত মুখোপাধ্যায়, জইদ আহমেদ, নিরাপত্তা রক্ষী পিনাকী বন্দোপাধ্যায় । এদের মোবাইল ফোন বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।